সাবেক সচিব শাহ আব্দুল হান্নানের মতো ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এতোদিনে কোদাল কে কোদাল বলিয়া চিনিলো

 মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন

লেখকঃ সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ।er

যতোটা মনে পরে ১৯৯৭ সালে খ্যাতনামা সাংবাদিক ও কলামিষ্ট মোবায়দুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবের রাজনৈতিক রঙ্গালয় নামে নিয়মিত কলামে লিখেছিলেন শাহ আব্দুল হান্নান এতোদিনে কোদাল কে কোদাল বলিয়া চিনিল। এই কলাম লিখার পিছনে যুক্তিককারন ছিল । ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর ভিন্নমতের অসংখ্য সরকারী কর্মকর্তাকে অপসারন, চাকরিচ্যুত, নানা অজুহাতে পদোন্নতি না দেয়াসহ নানা অগনতান্ত্রিক কাজ করেছে । সেই সময় শাহ আব্দুল হান্নান এর মতো বিপরীত মেরুর বেশ পরিচিত ব্যাক্তিকে হাসিনা সরকার সচিব হিসেবে পদোন্নতি সহ বেশ কয়কটি গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব দেন। এ বিষয়ে আমরাও বেশ অবাক হয়েছিলাম।

যদিও শাহ আব্দুল হান্নান এ যাবৎ কালের সকল সচিবদের মধ্যে ব্যতিক্রম মানুষ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ছিলেন । তাঁর সততা ও ন্যায়পরায়নতা তাকে সকলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্রে পরিনত করেছিল। তার পরও কেনো শেখ হাসিনা তাঁর মতো একজন ইসলামিক স্কলার ও ডানপন্থি ব্যাক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখেছিলেন; তা আজও আমরা জানতে পারিনি। যদিও সর্বশেষ শাহ আব্দুল হান্নান তৎকালিন বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এর ভাইয়ের একটি ফাইলের বিষয়ে দ্বিমতের কারনে সততার প্রশ্নে তিনি সেচ্ছায় এনবিআর থেকে সড়ে দারিয়েছিলেন। সে সময় র্তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবারের জন্যও তাকে ঐ পদে থাকতে অনুরোধ করেননী।

অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপুল পরিমান টাকা চুরির বিশাল ঘটনা ঘটার পর দলীয় ফোরামে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভণর এর বিরুদ্ধে অনেকেই অবস্থান নেয়ায় র্গভণর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগ পত্র গ্রহনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢুকরে কেঁদে ছিলেন। সম্প্রতি বিএনপির সাবেক নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় মাননীয় সুপ্রিম র্কোটের রায়ের খবর দেখে শাহ আব্দুল হান্নানের জীবনে ঘটে যাওয়া বিষয়টি মনে পরে গেলো। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনপির নীতি র্নিধারনী স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। ৯০ দশকের শুরু থেকেই তাঁর সঙ্গে আমাদের একটা গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সাচ্চা জাতীয়তাবাদী চেতনার মানুষ হিসেবে তাঁর তুলনা তিনি নিজেই ছিলেন। ৯০ এর পর বিএনপির তথ্য মন্ত্রী থাকাকালে ভারত থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক দেশ পত্রিকায় বাংলাদেশ বিষয়ে আপত্তিকর সংবাদ প্রকাশের পর তিনি ভারতের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে ঐ পত্রিকা বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ করেছিলেন। শুধু তাই নয় দেশের প্রশ্নে তিনি ফ্যাসীবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে জোড়ালো ভুমিকা রেখেছিলেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের পল্টনের এক সমাবেশে বক্তব্য রেখে পতিক্রিয়াশীলদের সমালোচনার শিকার হয়েছেন। যদিও মাঝেমধ্যে নানা বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় তুলেছেন । সম্প্রতি বেশ কিছু দিন ধরে তিনি সরকারের নানা কর্মকান্ডের প্রশংসার পাশাপাশি বিএনপির র্শীষ নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে নানা কথা বলে আসছিলেন । র্সবশেষ তৃনমূল বিএনপি নামে একটি রাস্ট্রীয় দলও গঠন করেছিলেন । র্পযবেক্ষক মহলের মূল্যায়ন র্বতমান ফ্যাসীবাদী আওয়ামীলীগ সরকারের রোষানল থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়ার জন্যই তিনি এ ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন । কিন্তু শেষ রক্ষাহয়নি। শেষ র্পযন্ত আওয়ামীলী হায়নার ছোবলে তিনি কুপোকাত হলেন। ইসলামিক স্কলার শাহ আব্দুল হান্নানের প্রেক্ষাপট আর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা এক না হলেও ; এরা দুজনের রাজনৈতিক চিন্তা কিছুটা হলে একই জাতীয়তাবাদী ধারার। আমার মনে হয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মনে মনে এতোদিন পরে হলেও শাহ আব্দুল হান্নানের মতো কোদাল কে কোদাল বলিয়া চিনিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.