দূতাবাস সমূহের দুর্নীতি , ফ্রান্স প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব  প্রতিবেদক –

dudukগত মে মাসে বাংলাদেশ অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে ১১ টি মিশনে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের জন্য অডিট প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে গত দুইদিন থেকে ফ্রান্সের  বাংলা সংবাদ মাধ্যমে ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলাম কে নিয়ে লেখালেখি বেশ জমে উঠেছে। ফ্রান্সের বাংলা সংবাদ মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত নিয়ে সংবাদ প্রচারের পর প্রবাসীদের মাঝে পক্ষ বিপক্ষে ও বিভিন্ন যুক্তিকথা নিয়ে কমিউনিটিতে চলছে তোড়জোড় আলোচনা।

কমিউনিটির সচেতন সমাজকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তাদের নিজস্ব মতামত। সাংস্কৃতিক কর্মী নূর হাসনাত পলাশ এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন
–রাষ্ট্রদূত কিংবা দূতাবাসের বিরুদ্ধে দুদুক যেই অভিযোগটি এনেছেন তা এখনো প্রমানিত হয়নি তাই একজন সম্মানিত ব্যাক্তির সম্মানকে আমরা এভাবে কুকুরের মুখে ছুড়ে দিতে পারিনা। যেই ব্যাক্তিটিকে সু-স্বাগতম জানিয়েছিলাম, যার কার্য্যকলাপে আমরা সকলে আকৃষ্ট হয়েছি , যার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি , দুদুকের আনিত এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রমানিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে অসম্মান করার অধিকার আমাদের কারো নেই। কোন কারণবশত কিংবা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এটা যদি মিথ্যা প্রমানিত হয় আজকে যারা অতি উৎসাহিত হচ্ছেন একদিন এর দায়ভারও কিন্তু তাদের নিতে হবে। আর যদি এটা তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রমানিত হয় তাহলে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব।

কলামিস্ট শরীফ আহমদ সৈকত লিখেছেন–অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কারো ব্যাপারেই দোষী হিসেবে কোনো নিশ্চিত মন্তব্য করা ঠিক না, বরং মানহানির বিষয়।

বিশিষ্ঠ পুঁথি শিল্পী কাব্য কামরুল ও প্যারিস বাংলা প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক দোলন মাহমুদ নূর হাসনাত পলাশ এর ফেইসবুক স্টেস্টাসের প্রতি সহমত জানিয়েছেন।

প্যারিস বাংলা প্রেসক্লাবের কোষাধক্ষ ফেরদৌস করিম আখনজী তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন –কথিত বড় ভাই কি টেনশনে ? নিরবতা ভেঙ্গে সাফাই গাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। থলের বিড়াল বেড় হওয়ার সম্ভবনা আছে কি ? দেখার অপেক্ষায়।তিনি আরেক স্টাটাসে লিখেছেন কেন জানি মনে হচ্ছে ঈদের দিন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলাম তার নিজ বাসভবনে ডিনারের ব্যবস্থা করে নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছেন কারন।

উল্লেখ্য যে  ১১ টি মিশনে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের জন্য অডিট প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল মিশনগুলো হলো, বাংলাদেশ হাই কমিশন কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ দুতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি, কনস্যুলেট জেনারেল নিউইয়র্ক এবং কনস্যুলেট জেনারেল  লস এঞ্জেলস, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন, সহকারী হাই কমিশনার বার্মিংহাম এবং সহকারী হাই কমিশনার ম্যানচেস্টার, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশ দুতাবাস, রিয়াদ এবং কনস্যুলেট জেনারেল, জেদ্দা, সৌদী আরব, বাংলাদেশ দুতাবাস প্যারিস, ফ্রান্স, বাংলাদেশ দুতাবাস, বেইজিং, কনস্যুলেট জেনারেল হংকং এবং কনস্যুলেট জেনারেল, কুমিং- চীন, বাংলাদেশ দুতাবাস আবুধাবি এবং কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই- সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাংলাদেশ দুতাবাস রোম এবং কনস্যুলেট জেনারেল মিলান, ইতালী, বাংলাদেশ দুতাবাস জেনেভা- সুইজারল্যান্ড, বাংলাদেশ হাই কমিশন অটোয়া, কানাডা এবং বাংলাদেশ দুতাবাস ম্যানিলা, ফিলিপাইন। এসব মিশনের ২০০৯-১০ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত সম্পাদিত অডিট রিপোর্ট ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র  চাওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন, ঢাকা’র নথি নম্বর দুদক/বি: অনু: ও তদন্ত-২/৪১-২০১৬/ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় ঢাকার স্মারক নম্বর দুদক দুদক/বি: অনু: ও তদন্ত -২/৪১-২০১৬- ২০৭৯৬ তারিখ ১৬/০৫/২০১৬ খ্রি: এর সুত্র মতে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

পত্রে উল্রেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের ফরেন মিশন, হাইকমিশন ও কনস্যুলেট জেনারেল, মন্ত্রনালয়ের নচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে অর্থ আত্‘সাতের অভিযোগ কমিশন কর্তৃক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক মুহ: মাহবুবুল আলমকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বাংলাদেশের ফরেন মিশন, হাইকমিশন ও কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের ২০০৯-১০ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত অডিট রিপোর্ট অনুসন্ধান করা হবে। ৩০-০৫-২০১৬ তারিখে অনুসন্ধানের স্বার্থে সকল রেকর্ড পত্র চাওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.