বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা

মোঃ মখলিছুর রহমান, লন্ডন

কি হল আমাদের ?কোথায় ধাবিত হচ্ছি আমারা ?

সংস্কৃতির নামে এ কেমন লাফালাফি ।সমাজে কেহই কিছু বলার নেই ।যা ইচ্ছা তাই করা হচ্ছে । ধর্মনিরপেক্ষতার নামে, চেতনার নামে আমরা দেশ কে নিয়ে যাচ্ছি অজানা এক গন্তব্যে,ধর্মহীনতার দিকে।

বৈশাখ মাস কি এইবার প্রথম এল বাংলাদেশে ? এ কেমন

বেহায়াপনা। সৃষ্টির সেরা জীব এই মানুষ মুখুশ লাগায় হুতুম পেঁচার. মঙ্গলের জন্য শোভা যাত্রা করে, বটতলায় বসে আগমনী গান গাওয়া হয় । আমার প্রশ্ন মঙ্গল আসবে কার কাছ থেকে ? যদি আল্লাহ সব মঙ্গলদাতা হন তবে কি আল্লাহ এই কার্যকলাপ সমর্থন করেন । এই পথে কি মঙ্গল

চাওয়ার গ্রণযোগ্যতা আছে ? আমার মতে এই সরল কথা বাংলাদেশের সব ধর্ম ও বর্নের মানুষ জানে ।

এই আমি বাংলাদেশেই বড় হলাম । বাংলাদেশের গ্রামের জীবন জানি , শহুরে জীবন ও খুব ভাল করে জানি ,দেখেছি, ছিলাম । বাংলাদেশের অন্যতম একটি কলেজে পড়াশুনা করলাম কৈ এত বৈশাখ বৈশাখত দেখিনি। নববর্ষের আগে মহাজনরা তাদের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য চিঠি দিতেন , বাড়ি যেতেন এবং নববর্ষের দিন সব গ্রাহক কে মিষ্টিমুখ করতেন এইত শেষ ।আমাদের বাংলা নতুন বছর শুরু হয় তাই মহাজনরা তাদের পুরাতন হালখাতা নবায়ন করেন ।

এইবার দেখলাম বাংলাদেশের গ্রাম থেকে নগর বন্দর ও

বিদেশের মিশনগুলোতে বৈশাখ পালিত হল । গ্রাম থেকে শহর পর্য্যন্ত সবাই নতুন কাপড় , নতুন সাজে সাজলেন , আনন্দ করলেন । সবচেয়ে আশ্চর্য হল মাদ্রাসাগুলোতে ও বৈশাখ চাপিয়ে দেওয়া হল .অনেক মাদ্রাসা দেখলাম ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অসহায়ের মত । বাংলাদেশের আগের বছরগুলোতে আগে এই লাফালাফি

ছিলনা বলে কি মানুষ ভাল ছিলনা ?

রাষ্ট্রীয় জীবনে আপনি ধর্মের বাস্তবায়ন চাননা , কিন্তু ব্যক্তি জীবনত আপনার একার ।একাই এলেন এই ধরাতে , একাই একদিন চলে যাবেন । সাথে আপনার পরিবার পরিজন ,নেতা , নেত্রী ,দল , আপনার দলের মতবাদ কিছুই যাবেনা । কি বিবেচনা আপনার নিজেকে নিয়ে .

কথায় বলে পাগল ও নিজের বুজ বুজে . আপনি এমন কাজ কেন করেন যা আপনার ধর্ম সাপোর্ট করেনা .

আসুন একটু সরল অংক করি .

পবিত্ৰ কোরআনে আল্লাহ বলেছেন :

“অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে(৮২:১০ )

পরে বলেছেন :

সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ(৮২:১১ )।

অন্যত্র বলেছেন :

“যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল গ্রহণ করে(৫০:১৭ )।

পরে বলেছেন :

“সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে(৫০:১৮)।

এই যে প্রহরী তারা আল্লাহর হুকুমে আপনার সব কর্মকে লিপিবদ্ব করতেছেন । আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আপনাকে বই আকারে দিবেন কিয়ামতে পড়ার জন্য এবং বলবেন তুমার নিজের বিচার করে নাও নিজে ।

আপনার এই যে রঙীন জীবন তার ডেফিনেশন আল্লাহ দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে :

আল্লাহ বলেছেন :

“তাদের কাছে পার্থিব জীবনের উপমা বর্ণনা করুন। তা পানির ন্যায়, যা আমি আকাশ থেকে নাযিল করি। অতঃপর এর সংমিশ্রণে শ্যামল সবুজ ভূমিজ লতা-পাতা নির্গত হয়; অতঃপর তা এমন শুস্ক চুর্ণ-বিচুর্ণ হয় যে, বাতাসে উড়ে যায়। আল্লাহ এ সবকিছুর উপর শক্তিমান(১৮:৪৫)

অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন :

“তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়, যেমন এক বৃষ্টির অবস্থা, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়” (৫৭:২০)

মানুষ অকৃতজ্ঞ হয় অন্য মানুষের কাছে । স্বার্থ হাসিলের পর কেটে পড়ে বা অস্বীকার করে কিন্তু আপনি আল্লাহ কাছে অকৃতজ্ঞ কেমনে হবেন । আপনিত জানেন ফিরে যাবেন আল্লাহর কাছে । কবর থেকেই আপনি আল্লাহর জিম্মায় , তার পর শেষ বিচারের দিন , পরে আপনার স্থায়ী বাসস্থান হবে । আপনি কি চিন্তা করেছেন বা হিসাব মিলিয়েছেন কত দিনই বা ছিলেন রুহের জগতে , কতদিন আছেন এই হইজগতে , কতদিন থাকতে হবে কবরের জগতে , পরে সীমাহীন জগতে আপনার পরিনাম কি হবে ?

কত যে ছোট আমাদের জীবন । কতকাল একজন বাংগালী ভাই এসে আমার কাছ থেকে ৩০০ ইউরো কিনলেন । কথা প্রসঙ্গে বললেন দুই সপ্তাহ আগে উনার ১৩ বছরের মেয়ে মারা গেছেন । সুস্হ সবল একটি মেয়ে হটাৎ মারা গেল ।

কাজে গেলেন মেয়েটিকে সুস্থ ঘরে রেখে , কাজ থেকে এসে দেখলেন মেয়েটি একটু খারাপ ফিল করতেছে । হসপিটালে নিলেন , রাতেই মেয়েটি মারা গেল । উনার আরেক আত্বীয় ৯ বছরের মেয়ে ও নাকি গত সপ্তাহে এই ভাবে মারা গেছেন হটাৎ করেই .কথা বলতে বলতে বইটির চোখ দেখলাম ভেঁজা . আমার সান্তনা দেওয়ার ভাষা ছিলোনা ।

আসে পাশের কত মানুষ আপন জন পরিণত অপরিণত আমাদের সামনেই মৃত্যুবরণ করতেছেন । আমরা নিজ হাতে মাটির ঘর কবরে রেখে আসতেছি তার পর ও আমরা খামাখা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতেছি . মুখুশ লাগাচ্ছি পেঁচার , বানরের , বিড়াল ও কুকুরের . ১৯৯৭ সালে নাকি এই মঙ্গলের শুরু হয় . এর আগে কি আমাদের মঙ্গল ছিল না বা আমরা কি অমঙ্গলের মধ্যে ছিলাম ।

কিয়ামতের মাঠে চুলছেড়া বিচার হবে . আল্লাহ বলেই দিয়েছেন :

“অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে”(৯৯:৭)

“এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে”(৯৯:৮)

অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন :

“আর আমলনামা সামনে রাখা হবে। তাতে যা আছে; তার কারণে আপনি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা। এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি-সবই এতে রয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারও প্রতি জুলুম করবেন না”(১৮:৪৯ )

সুতরাং আমরা এমন কাজ কেন করব যা আমার পরকালীন জীবনে সাহায্য করবেনা বা পরকালকে নষ্ট করে দিবে । আমাদের সকলের উচিৎ হবে ধর্ম কে স্টাডি , এবং ক্লিয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং করা কি করতে হবে বা কি করা উচিত .

আমার এই স্ট্যাটাস যে পড়বেন বা ফ্রেন্ড লিস্টে যাহারা মুসলমান সবাই এই কথাগুলি জানেন ও বুজেন .

আল্লাহ সবাই কে এই সহজ ও সরল কথাগুলি অনুধাবন করার ও সেই পথে চলার তাওফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.